October 22, 2024, 5:44 am

ভোলায় জেলেদের সারা দিন ইলিশ শিকার; সন্ধ্যায় ভাগে মিলল ৫০ টাকা করে

ভোলায় জেলেদের সারা দিন ইলিশ শিকার; সন্ধ্যায় ভাগে মিলল ৫০ টাকা করে

বিপ্লবী ডেস্ক ॥ চলতি বর্ষার মৌসুমেও ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে জেলেদের জালে মিলছে না ইলিশ। সারা দিন মাছ শিকার করে সন্ধ্যায় ৫০ টাকা করে ভাগে পেয়েছেন কয়েকজন জেলে। নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় কুরবানি ঈদ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

একদিকে ঈদে পশু কুরবান অন্যদিকে ঈদের দিন সেমাই, নুডুলস, চাল, মসল্লা ক্রয় ও পরিবারের ছোট-ছোট শিশুদের নতুন পোশাক কিনে দেওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পরেছে তাদের। জেলেদের দাবি এ বছর ইলিশ মৌসুমে ভালো মাছ শিকার করতে না পেয়ে তারা অনেক কষ্টে রয়েছে।

ভোলা জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ভোলার সাত উপজেলা প্রায় দেড় লাখ জেলের সরকারিভাবে নিবন্ধন রয়েছে। কিন্তু বেসরকারি হিসেবে জেলের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। এদের মধ্যে আবার সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময় নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে প্রায় ৫০-৬০ ভাগ জেলে সরকারি বরাদ্দের চাল পান।

ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন মৎস্য ঘাটে সরেজমিন দেখা গেছে, আসন্ন কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে অনেক জেলে তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নদীতে ইলিশ শিকার করতে নেমে পরেছেন। কাক ডাকা ভোর থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে জাল ফেলে তীরে ফিরছেন হতাশা নিয়ে।

আর তাদের জালে যে মাছ উঠে আসছে তা দিয়ে ঠিকমতো তেলের খরচ দিয়ে চাল ক্রয় করার টাকাও থাকেনা। সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকার জেলে মো. কবীর মাঝি ও একরাম মাঝি জানান, ভোর রাত থেকে বিকাল পর্যন্ত তারাসহ ৮ জন মাঝি মাছ শিকারের নদীতে নেমেছেন। কিন্তু তাদের জালে দুইটি ৭শ গ্রাম ওজনের ও চারটি ছোট সাইজের ইলিশ উঠেছে। তা ঘাটে নিয়ে মাত্র ১ হাজার ৬শ টাকা বিক্রি করেছেন।

পরে তেলের দোকানে ১ হাজার ২শ টাকা পরিশোধ করেছেন। আর বাকি ৪শ টাকা ৮ জন ৫০ টাকা করে নিয়েছেন। একই এলাকার জেলে মো. এমরান মাঝি ও মান্নান মাঝি জানান, নদীতে প্রতিদিনই অনেক আশা নিয়ে যাই কিন্তু একদিনও আশা পূরণ হয় না। রোববার কুরবানির ঈদে কুরবানি দিব কীভাবে। টাকা পাব কই। ঘরে ছোট ছোট শিশু রয়েছে তারা ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাকের বায়না ধরেছে কিন্তু কিছুই কিনে দিতে পারছি না।

তারা আরও জানান, ঈদের দিন সকালে যে নুডুলস, সেমাই খাব সেই পরিস্থিতিও নাই। অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের গরিবের জন্য ঈদ নাই। তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের আড়তদার মো. কামাল ব্যাপারী জানান, এ বছর শুরুর থেকে এখন পর্যন্ত নদীতে জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাওয়া যায়নি। জেলেরা যেমন কষ্টে আছে তেমনি আমরা আড়তদাররাও অনেক কষ্টে আছি। ঢাকা ও বরিশাল মোকাম থেকে দাদন এনে জেলেদের টাকা দিয়েছি।

এখন মাছ পাঠাতে পারছি না। তিনি আরও জানান, জেলেরা কুরবানির ঈদ উপলক্ষে নদীতে যায় কিন্তু মাছ পায় না। এখন আমাদের কাছে বউ ও ছোট ছোট শিশুদের নিয়ে এসে ঈদ করার জন্য টাকা চায়।

কিভাবে আমরা তাদের টাকা দিব। আমাদেরও তো খারাপ অবস্থা।  ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ বর্তমানে নদীতে ইলিশের পরিমাণ কমের কথা স্বীকার করে জানান, আমরা আশা করছি আগামী আগস্টের শেষের দিকে নদীতে জেলেদের জালে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়বে। আর জেলেদের সব কষ্ট দূর হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © All rights reserved © 2024 DailyBiplobiBangladesh.com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com